দিয়ারা অপারেশন:
ফরাসী শব্দ দরিয়া যার বাংলা অর্থ সাগর বা সমুদ্র। বড় নদীও দরিয়া শব্দের অমত্মর্ভুক্ত। দরিয়া ও বড় নদীর পয়সিত্মর ফলে জেগে উঠা চর ভূমিই হলো দিয়ারা। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা অধিকাংশ নদ-নদীর উৎপত্তিস্থল হিমালয় পর্বতমালা। এই সকল নদ-নদী উজান থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টন পলি মাটি বহন করে নিয়ে আসে। নদীবাহিত এই সকল পলি এবং পদ্মা, মেঘনা, যমুনার মত বড় বড় নদীগুলোর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় এবং নদী ভাঙ্গন এলাকায় প্রতিবছর অসংখ্য চর জেগে উঠে। এই সকল চরের দখল ও মালিকানা নিয়ে প্রতিনিয়তই সৃষ্টি হয় নানা ধরনের সমস্যা। যার পরিণতি হলো মারামারি, প্রাণহানী এবং মামলা মোকদ্দমা। এই সকল অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সমাধান এবং দেশের সুদূর প্রসারী উন্নয়ন কর্মকান্ডে জেগে উঠা নতুন ভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে এই সকল ভূমির সঠিক ভূমি রেকর্ড ও নকশা তৈরির গুরম্নত্বপূর্ণ কাজটিই হলো দিয়ারা জরিপ। দিয়ারা জরিপের দায়িতব পালনকারী কর্তৃপক্ষের নামই হলো দিয়ারা অপারেশন।
দিয়ারা অপারেশনের প্রধান কার্যাল ২৮, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, তেজগাঁও, ঢাকায় অবস্থিত ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের চতুর্থ তলায়। এটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। দিয়ারা অপারেশনের তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয় যথাক্রমে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহীতে অবস্থিত। এছাড়া একটি উপ-আঞ্চলিক (ক্যাম্প) কার্যালয় রয়েছে নরসিংদীতে।
দিয়ারা অপারেশন ১৯৫৩ সন হতে নদী ও উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে উঠা চর ভূমির স্বত্বলিপি ও নকশা তৈরির মাধ্যমে কার্যক্রম শুরম্ন করে। ২০১৫ সন হতে সীমিত আকারে দিয়ারা অপারেশনের জরিপ কার্যক্রম আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শুরম্ন করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের ঘোষিত ভিশন ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১৬ সনে গ্রহীত সকল জরিপ কর্মসূচি আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাটা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে দিয়ারা অপারেশন ম্যানুয়াল জরিপের পরিবর্তে আধুনিক স্বচ্ছ ও অধিকতর কল্যাণধর্মী ডিজিটাল জরিপের যুগে প্রবেশ করে।